ক্রিয়া সম্পাদনের কাল (সময়) এবং আধারকে অধিকরণ কারক বলে। যে কারকে স্থান, কাল, বিষয় ও ভাব নির্দেশিত হয়, তাকে অধিকরণ কারক বলে। এ কারকে সপ্তমী অর্থাৎ 'এ', 'য়', 'তে' ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন:
- আধার (স্থান) : আমরা রোজ স্কুলে যাই। এ বাড়িতে কেউ নেই।
- কাল (সময়) : প্রভাতে উঠিল রবি লোহিত বরণ। প্রভাতে সূর্য ওঠে।
ক্রিয়ার সাথে কোথায় / কখন / কিসে যোগ করে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তাই অধিকরণ কারক। যেমন- প্রভাতে সূর্য ওঠে। এখানে যদি প্রশ্ন করা হয়, কখন সূর্য ওঠে? তাহলে উত্তর পাই- 'প্রভাতে'। সুতরাং, এখানে 'প্রভাতে' অধিকরণ কারক। বাবা বাড়িতে আছেন। বিকাল পাঁচটায় অফিস ছুটি হবে। রাজীব বাংলা ব্যাকরণে ভালো।
অধিকরণ কারক ৩ প্রকার। যথা:
১. কালাধিকরণ: যে অধিকরণে ক্রিয়ার কাল বোঝানো হয়, তাই কালাধিকরণ। যেমন: বসন্তে ফুল ফোটে।
২. আধারাধিকরণ: আধারাধিকরণ ৩ ভাগে বিভক্ত। যথা-
- ঐকদেশিক আধারাধিকরণ: বিশাল স্থানের যে কোনো অংশে ক্রিয়া সংঘটিত হলে তাকে ঐকদেশিক আধারাধিকরণ বলে। যেমন: পুকুরে মাছ আছে। (পুকুরের যেকোনো স্থানে) বনে বাঘ আছে। (বনের যেকোনো এক অংশে) আকাশে চাঁদ উঠেছে। (আকাশের কোনো এক অংশে) সামীপ্য অর্থেও ঐকদেশিক অধিকরণ হয়। যেমন- ঘাটে নৌকা বাঁধা আছে (ঘাটের কাছে)। 'দুয়ারে দাঁড়ায়ে প্রার্থী।' ভিক্ষা দেহ তারে (দুয়ারের কাছে)। রাজার দুয়ারে হাতি বাঁধা।
- অভিব্যাপক আধারাধিকরণ: উদ্দিষ্ট বস্তু যদি সমগ্র আধার ব্যাপ্ত করে বিরাজমান থাকে, তবে তাকে অভিব্যাপক আধারাধিকরণ বলে। যেমন- নদীতে পানি আছে। (নদীর সমস্ত অংশ ব্যাপ্ত করে) তিলে তৈল আছে। (তিলের সারা অংশব্যাপী)
- বৈষয়িক আধারাধিকরণ: বিষয় বিশেষে বা কোনো বিশেষ গুণে কারো কোনো দক্ষতা বা ক্ষমতা থাকলে সেখানে বৈষয়িক আধারাধিকরণ হয়। যেমন- সাদিয়া ইসলাম রিয়া ব্যাকরণে পণ্ডিত, কিন্তু সাহিত্যে কাঁচা। আমাদের সেনারা সাহসে দুর্জয়, যুদ্ধে অপরাজেয়।
৩. ভাবাধিকরণ: যদি কোনো ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য অন্য ক্রিয়ার কোনো রূপ বা ভাবের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে, তাকে ভাবাধিকরণ বলে। যেমনঃ কান্নায় শোক কমে। সূর্যোদয়ে অন্ধকার দূরীভুত হয়।