বহুবচন করার নিয়মাসমূহ

১. উন্নত প্রাণীবাচক মনুষ্য শব্দের (মানী পক্ষ) বহুবচনে ব্যবহৃত শব্দঃ

বহুবচনবাচক শব্দ প্রয়োগ 
গণদেবগণ, নরগণ, জনগণ, সদস্যগণ, সচিবগণ 
বৃন্দ )সুধীবৃন্দ, ভক্তবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, দর্শকবৃন্দ 
মণ্ডলী নির্বাচকমণ্ডলী, শিক্ষকমণ্ডলী, সম্পাদকমণ্ডলী, সুধীমণ্ডলী 
বর্গপণ্ডিতবর্গ, মন্ত্রিবর্গ 

২. অপ্রাণীবাচক শব্দের বহুবচনে ব্যবহৃত শব্দ:

বহুবচনবাচক শব্দপ্রয়োগ
পুঞ্জমেঘপুঞ্জ, দ্বীপপুঞ্জ
মালাপর্বতমালা, বর্ণমালা, মেঘমালা
রাশিবালিরিশ, জলরাশি
রাজিতারকারাজি, বৃক্ষরাজি
আবলিপুস্তিকাবলি, পদাবলি, রচনাবলি, নিয়মাবলি
গুচ্ছকবিতাগুচ্ছ, কেশগুচ্ছ
দামকুসুমদাম, শৈবালদাম
নিকরকমলনিকর
নিচয়কুসুমনিচয়
গ্রামগুণগ্রাম

৩. প্রাণীবাচক ও অপ্রাণীবাচক শব্দের বহুবচনে ব্যবহৃত শব্দ:

বহুবচনবাচক শব্দপ্রয়োগ
কুলকবিকুল, পক্ষিকুল, মাড়কুল, বৃক্ষকুল
সকলপর্বতসকল, মনুষ্যসকল
সবভাইসব, পাখিসব
সমূহবৃক্ষসমূহ, মনুষ্যসমূহ, গ্রন্থসমূহ

৪. 'রা' কেবল উন্নত প্রাণীবাচক শব্দের সঙ্গে পাওয়া যায়। যেমন: শিক্ষকেরা জ্ঞান দান করেন।

৫. সময় সময় কবিতা ও অন্যান্য প্রয়োজনে অপ্রাণী ও ইতর প্রাণীবাচক শব্দেও রা, এরা, যুক্ত হয়। যেমন: কাকেরা এক বিরাট সভা করল।

৬. গুলা, গুলি, গুলো প্রাণীবাচক ও অপ্রাণীবাচক শব্দের বহুবচনে যুক্ত হয়। যেমন: অতগুলো কুমড়া দিয়ে কী হবে? আমগুলো টক। ময়ূরগুলো পুচ্ছ নাড়িয়ে নাচছে।

৭. পাল ও যুথ শব্দ দুটি কেবল জন্তুর বহুবচনে ব্যবহৃত হয়। যেমন: রাখাল গরুর পাল লয়ে যায় মাঠে। হস্তিযূথ মাঠের ফসল নষ্ট করছে।

৮. ( রা, এরা, গুলো, গুলি, দের ) ইত্যাদি লগ্নক যুক্ত হলে শব্দটির বহুবচন হয়। যেমন: রা (ছাত্ররা, ধনীরা); এরা (ভাইয়েরা, শিক্ষকেরা); গুলো (ফুলগুলো, গরুগুলো); গুলি (বইগুলি, ঘরগুলি); দের (ছেলেদের, মেয়েদের)।

৯. বিশেষ্য শব্দের এক বচনের ব্যবহারেও অনেক সময় বহুবচন বোঝানো হয়। যেমন: সিংহ বনে থাকে। (এখানে সিংহ একবচন ও বহুবচন দুইই বোঝায়) এ পোকার আক্রমণে ফসল নষ্ট হচ্ছে (বহুবচন)। মানুষ মরণশীল। বনে বাঘ বাস করে।

১০. একবচনাত্মক বিশেষ্যের পূর্বে অজস্র, অনেক, বিস্তর, বহু, নানা, ঢের, অঢেল ইত্যাদি বহুত্ববোধক শব্দ বিশেষণ হিসেবে প্রয়োগ করেও বহুবচন বোঝানো হয়। যেমন: অজস্র লোক, অনেক ছাত্র, বিস্তর টাকা, বহু মেহমান, নানা কথা, ঢের খরচ, অঢেল টাকা।

১১. অনেক সময় বিশেষ্য ও বিশেষণ পদের দ্বিত্ব প্রয়োগেও বহুবচন সাধিত হয়। যেমন: হাঁড়ি হাঁড়ি সন্দেশ। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। পাকা পাকা আম। লাল লাল ফুল।

১২. কতিপয় বিদেশি শব্দে, সে ভাষার অনুসরণে বহুবচন হয়। যেমন: আন যোগে: বুজুর্গ বুজুর্গান, সাহেব সাহেবান।

১৩. বিশেষ নিয়মে সাধিত বহুবচন:

  • মেয়েরা কানাকানি করছে। 
  • এটাই করিমদের বাড়ি। 
  • রবীন্দ্রনাথরা প্রতিদিন জন্মায় না। 
  • সকলে সব জানে। 
  • বাজারে লোক কম। 
  • মৌমাছি মৌচাক বানায়। 
  • সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে তিনি গবেষণা করছেন।

 

 

Reference: অগ্রদূত বাংলা