ব্যঞ্জনবর্ণ

ব্যঞ্জনবর্ণগুলো সাধারণত নিজ নিজ ধ্বনি অনুযায়ী উচ্চারিত হয়। যেমন: কলা, খর, বল, নাচ শব্দের ক, খ, ব, ন ইত্যাদি বর্ণের উচ্চারণ যথাক্রমে [ক], [খ], [ব], [ন] ইত্যাদি। তবে কয়েকটি ব্যঞ্জনবর্ণের উচ্চারণ নিজ নিজ ধ্বনি থেকে আলাদা। এ ধরনের কয়েকটি বর্ণের উচ্চারণ নিচে আলোচনা করা হলো।

ঞ বর্ণের উচ্চারণ:

  • ‘ঞ’ বর্ণের নিজস্ব কোনো ধ্বনি নেই। স্বতন্ত্র ব্যবহারে (আঁ)-এর মতো আর সংযুক্ত ব্যঞ্জনে (ন)-এর মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: মিঞা (মিয়া), চঞ্চল (চঞ্চল), গঞ্জ (গঞ্জো)।

ণ বর্ণের উচ্চারণ:

  • ‘ণ’ বর্ণের উচ্চারণ (ন): কণা (কনা), বাণী (বানি), হরিণ (হোরিন)।

ব' বর্ণের উচ্চারণ:

  • সাধারণ উচ্চারণ: (ব)
  • ফলা হিসেবে: উচ্চারণে স্বাতন্ত্র্য আছে।
  • শব্দের আদিতে ব-ফলা: উচ্চারণ হয় না। (যেমন: ত্বক (তক), শ্বশুর (শোশুরা), স্বাধীন (শাধিন))
  • শব্দের মধ্যে বা শেষে ব-ফলা: যুক্ত ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়। (যেমন: অশ্ব (অশৃশো), বিশ্বাস (বিশশাশা), পক্ক (পক্কো))

'ম' বর্ণের উচ্চারণ:

  • সাধারণ উচ্চারণ: (ম)
  • শব্দের প্রথম বর্ণে ম-ফলা: ম-এর উচ্চারণ অ-এর মতো হয়। (যেমন: শ্মশান (শশানা), স্মরণ (শরোন))
  • শব্দের মধ্যে ম-ফলা: বর্ণ উচ্চারণে দ্বিত্ব হয় এবং সামান্য অনুনাসিক হয়। (যেমন: আত্মীয় (আততিও), পদ্ম (পদদোঁ))
  • কিছু ক্ষেত্রে ম-ফলা: ম-এর উচ্চারণ বজায় থাকে। (যেমন: যুগ্ম (জুগমো), জন্ম (জনমো), গুল্ম (গুল্মা))

'য' বর্ণের উচ্চারণ:

  • সাধারণ উচ্চারণ: (জা: যদি (জোদি), যিনি (জিনি), সূর্য (শুরজো))
  • য-ফলা: স্বরের উচ্চারণে পরিবর্তন হয়। (যেমন: ব্যতীত (বেতিতো), ব্যথা (ব্যাথা))
  • শব্দের মাঝখানে বা শেষে য-ফলা: বর্ণের সঙ্গে যুক্ত থাকলে ঐ বর্ণের উচ্চারণ দ্বিত্ব হয়। (যেমন: উদ্যম (উদদমা), গদ্য (গোদাদো))
  • শব্দের মধ্যে বা শেষে যুক্ত ব্যঞ্জনের সঙ্গে থাকা 'য়': কোনো উচ্চারণ হয় না। (যেমন: সন্ধ্যা (শোনধা), স্বাস্থ্য (শাস্হ্যো), অর্থ্য (অরখো))

'র' বর্ণের উচ্চারণ:

  • সাধারণ উচ্চারণ: (র)
  • র-ফলা: উচ্চারণে বৈচিত্র্য আছে।
  • শব্দের মধ্যে বা শেষে র-ফলা: দ্বিত্বসহ র-ফলা উচ্চারিত হয়। (যেমন: মাত্র (মাতত্রো), বিদ্রোহ (বিদদ্রোহো), যাত্রী (যাত্রি))
  • শব্দের মধ্যে বা শেষে যুক্ত ব্যঞ্জনের সঙ্গে র-ফলা: দ্বিত্ব উচ্চারণ হয় না। (যেমন: কেন্দ্র (কেন্‌দ্রা), শাস্ত্র (শাসূত্রো), বস্ত্র (বস্ত্রো))

শ, ষ, স:

  • 'শ': কখনো (শা)-এর মতো, কখনো (স)-এর মতো উচ্চারিত হয়।
  • 'স': কখনো (শা)-এর মতো, আবার কখনো (স)-এর মতো উচ্চারিত হয়।
  • 'ষ': সব সময়ে (শা)।
  • শ বর্ণের (শা) উচ্চারণ: শত (শতো), শসা (শশা)।
  • শ বর্ণের (স) উচ্চারণ: শ্রমিক (স্রোমিকা), শ্রদ্ধা (স্রোদ্‌ধ্যা)।
  • ষ বর্ণের (শা) উচ্চারণ: ভাষা (ভাশা), ষোলো (শোলো)।
  • স বর্ণের (শ) উচ্চারণ: সাধারণ (শাধারোন), সামান্য (শামাননো)।
  • স বর্ণের (স) উচ্চারণ: আস্তে (আস্তে), সালাম (সালাম্)।

 

Reference: অগ্রদূত বাংলা