প্র. তাঁর উপন্যাসসমূহ কী কী?
উ. 'শেষ বিকেলের মেয়ে' (১৯৬০): এটি তাঁর প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস। এটি 'সাপ্তাহিক বিজলী' পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
'হাজার বছর ধরে' (১৯৬৪): আবহমান বাংলার জীবন ও জনপদ এর প্রতিপাদ্য। তিনি এ উপন্যাসের জন্য ১৯৬৪ সালে 'আদমজী সাহিত্য পুরস্কার' লাভ করেন। জহির রায়হানের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার সুচন্দা এ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন এবং 'জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার' লাভ করেন। চরিত্র: টুনি, মন্ত্র, মকবুল।
'আরেক ফাল্গুন' (১৯৬৯): ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ হয়ে ১৯৫৫ সালে বর্তমান শহিদ মিনারের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ও চেতনাকে আশ্রয় করে রচিত। এটি তাঁর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস।
উপন্যাস সমগ্র:
চলমান আন্দোলন, জনতার সম্মিলন, ছাত্র/ছাত্রীদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ, তাদের প্রেম-প্রণয় ইত্যাদি এ উপন্যাসের মূল বিষয়। এটি ভাষা আন্দোলনভিত্তিক প্রথম উপন্যাস।
'আর কত দিন' (১৯৭০): মুক্তিযুদ্ধপূর্ব সময়ের অস্থির সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনমুখর প্রেক্ষাপটে আসন্ন যুদ্ধের একটি ভয়াবহ সম্ভাবনা, যুদ্ধকালীন বাস্তবতা, লাঞ্ছিত মানবতার আর্তি, শান্তি ও ভালোবাসার জন্য মানুষের চিরন্তন অন্বেষা এ উপন্যাসের মূল উপজীব্য। ইভা ও তপু এ উপন্যাসের শাশ্বত শান্তি ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক।
'একুশে ফেব্রুয়ারি' (১৯৯২): এটি ভাষা আন্দোলনভিত্তিক উপন্যাস। জহির রায়হান ১৯৭০ সালে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, সে উদ্দেশ্যকেই মূর্ত করে রচনা করেন এ উপন্যাসের কাহিনী। কিন্তু তিনি 'জীবন থেকে নেয়া' চলচ্চিত্রে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট যোগ করলে, পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে এটি উপন্যাস হিসেবে প্রকাশিত হয়।
'তৃষ্ণা' (১৯৬২), 'বরফ গলা নদী' (১৯৬৯), 'কয়েকটি মৃত্যু' (১৯৬৫)।
শেষ সপ্তক (কাব্যগ্রন্থ) = রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
প্র. তাঁর পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলো কী কী?
উ. 'কখনো আসেনি' (১৯৬১): এটি তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র।
'সঙ্গম' (১৯৬৪): এটি বাংলাদেশের প্রথম রঙ্গিন চলচ্চিত্র।
'জীবন থেকে নেয়া' (১৯৭০): এটি ভাষা আন্দোলনভিত্তিক চলচ্চিত্র। প্রথম এই চলচ্চিত্রেই জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।
'কাঁচের দেয়াল' (১৯৬৩): এটি নিগার পুরস্কার লাভ করে।
'বাহানা' (১৯৬৫): এটি ছিল উর্দু ভাষায় নির্মিত এবং তৎকালীন পাকিস্তানের প্রথম সিনেমাস্কোপ ছবি।
Let there be Light: প্রামান্যচিত্র।
'সোনার কাজল' (১৯৬২), 'বেহুলা' (১৯৬৬), 'আনোয়ারা' (১৯৬৭)।
প্র. Stop Genocide কী?
উ. বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার প্রামাণ্যচিত্র। এটি ১৯৭১ সালে জহির রায়হান কলকাতা থেকে তৈরি করেন।
প্র. তাঁর গল্পগ্রন্থটির নাম কী?
উ. 'সূর্যগ্রহণ' (১৯৫৫)।
প্র. তাঁর রচিত গল্পসমূহ কী কী?
উ. 'সূর্যগ্রহণ': বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত তসলিম নামক যুবকের পরিবারের মর্মবিদারক কাহিনী নিয়ে রচিত।
'বাঁধ': গ্রামীণ পটভূমিতে পীরদের ভণ্ডামি নিয়ে রচিত।
প্র. ভাষা আন্দোলনের প্রভাবে রচিত 'একুশের গল্প' সম্পর্কে লিখ। (৩১তম বিসিএস লিখিত।
উ. বিখ্যাত ঔপন্যাসিক ও চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান রচিত ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বিখ্যাত ছোটগল্প 'একুশের গল্প'। এ গল্পের প্রধান চরিত্র ঢাকা মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্র তপু। জন্ম থেকেই তার একটি পা ছোট ছিল। সে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা আদায়ের মিছিলে যোগ দেয় এবং মিলিটারির গুলি তার কপালে আঘাত করলে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। শাসকশ্রেণি তার লাশ পর্যন্ত গায়েব করে। চার বছর পর তপুর সহপাঠীর রুমমেট একটি কঙ্কাল নিয়ে গবেষণা করার সময় দেখতে পায় কঙ্কালের একটি পা ছোট এবং কপালে ছিদ্র। সাথে সাথে ছাত্রটি তা তপুর বন্ধুদের দেখায়। তপুর বন্ধুরা কঙ্কালটি পরীক্ষা করে দেখে এটি তপুরই কঙ্কাল। এভাবেই তপু আবার কঙ্কাল হয়ে বন্ধুদের মাঝে ফিরে আসে।