মোহাম্মদ নজিবর রহমান সাহিত্যরত্ন বাংলা ভাষার একজন প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক, যিনি উনবিংশ শতাব্দীতে সাহিত্য জগতে প্রবেশ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তাঁকে উনবিংশ শতাব্দীর বিকাশোন্মুখ মধ্যবিত্ত মুসলমান সমাজের প্রতিনিধি গণ্য করা হয়।
প্র. তাঁর উপন্যাসসমূহ কী কী?
উ. 'আনোয়ারা' (১৯১৪), 'প্রেমের সমাধি' (১৯১৫), 'চাঁদতারা বা হাসান গঙ্গা বাহমণি' (১৯১৭), 'পরিণাম' (১৯১৮), 'গরিবের মেয়ে' (১৯২৩), 'দুনিয়া আর চাই না' (১৯২৪), 'মেহেরুন্নিসা'।
প্র. 'আনোয়ারা' উপন্যাসের পরিচয় দাও।
উ. গ্রামীণ জীবনের পটভূমিকায় মুসলমান সম্প্রদায়ের পারিবারিক ও সামাজিক চিত্রের আলোকে নজিবর রহমান রচনা করেন বিখ্যাত উপন্যাস 'আনোয়ারা' (১৯১৪)। সত্যের জয় এবং অসত্যের পরাজয়, প্রেম, বিরহ, দাম্পত্য জীবনের নানাবিধ সংকট ও সেই সংকট থেকে উত্তরণ এ উপন্যাসের মূল সুর। নামাজের জন্য অজু করতে গিয়ে তরুণী আনোয়ারা কোরআন পাঠরত নুরুল এসলামকে দেখে। আনোয়ারা সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করে এমন ধর্মনিষ্ঠ স্বামীর জন্য। পরে তাদের মিলন হয়। এ উপন্যাসে দেখানো হয়েছে যে, একজন নারীর জীবনে পতির জন্য আরাধনা, পতিকে পাবার পর তার সেবাযত্ন, পতির কথার বাইরে না যাওয়া ইত্যাদি মূখ্য। 'সতীর সর্বস্ব পতি, সতী শুধু পতিময়, বিধাতার প্রেমরাজ্যে সতত পতীর জয়।' এটিই এ উপন্যাসের মূল বক্তব্য। স্বামীভক্ত আনোয়ারা এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। ষাটের দশকে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান এ উপন্যাসটি নিয়ে একটি সফল চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।
প্র. তাঁর রচিত গদ্যগ্রন্থসমূহ কী কী?
উ. 'বিলাতী বর্জন রহস্য' (১৯০৪), 'সাহিত্য প্রসঙ্গ' (১৯০৪)।