মহাকবি আলাওল ছিলেন বাঙালি পণ্ডিত কবি। বাংলা সাহিত্যে মধ্যযুগের ধর্মীয় বিষয়বস্তুর গতানুগতিক পরিসীমায় রোমান্টিক প্রণয়কাব্যধারা প্রবর্তনকারী হিসেবে মুসলমান কবিদের অবদান সর্বজনস্বীকৃত। তিনি রাজসভার কবি হিসেবে আবির্ভূত হলেও মধ্যযুগের সকল বাঙালি কবির মধ্যে 'শিরোমণি আলাওল' রূপে আরবি, ফারসি ও হিন্দি সাহিত্যের বিষয়বস্তু ও ভাববৈচিত্র্য অবলম্বনে কাব্য রচনায় এক নতুন যুগের সূচনা করেন।
প্র. 'পদ্মাবতী' কাব্য সম্পর্কে লিখ। (১০/১৩তম বিসিএস লিখিত)
উ. 'পদ্মাবতী' (১৬৪৮) মহাকবি আলাওলের প্রথম রচনা, যা ইতিহাস আশ্রিত রোমান্টিক প্রেমকাব্য। মালিক মুহম্মদ জায়সীর হিন্দি ভাষায় রচিত 'পদুমাবৎ' অবলম্বনে মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ মুসলিম কবি আলাওল মাগন ঠাকুরের অনুপ্রেরণায় 'পদ্মাবতী' কাব্য রচনা করেন। পদ্মাবতী কাব্য দুটি পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্ব হচ্ছে সিংহলের রাজকন্যা পদ্মাবতীকে লাভ করার জন্য চিতোররাজ রত্নসেনের সফল অভিযান এবং দ্বিতীয় পর্বে আছে রানি পদ্মাবতীকে লাভ করার জন্য দিল্লির সুলতান আলাউদ্দিন খিলজীর ব্যর্থ সামরিক অভিযানের বিবরণ। এ কাব্যে হিরামন নামে একটি শুকপাখির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এ কাব্যে কবির নাগরিক শিক্ষা, রুচির বৈদগ্ধ্য রূপ, ভাবের গভীরতা, ভাষা ও অলংকার প্রয়োগে বুদ্ধিদীপ্ততার পরিচয় পাওয়া যায় বলে 'পদ্মাবতী'কে আলাওলের শ্রেষ্ঠ রচনা বলা হয়। এ কাব্যের বিখ্যাত পক্তি- 'তাম্বুল রাতুল হৈল অধর পরশে।'
প্র. আলাওলের কাব্যসমূহ কী কী? (২৫তম বিসিএস লিখিত)
গ্রন্থ | প্রকাশকাল | উৎস | পৃষ্ঠপোষক |
পদ্মাবতী | ১৬৪৮ | পদুমাবৎ (মালিক মুহম্মদ জায়সী) | কোরেশী মাগন ঠাকুর |
রত্তনকলিকা আনন্দবর্মা | ১৬৫৯ | মৌলিক (লোরচন্দ্রাণী ও সতীময়নার উত্তরাংশ) | শ্রীমন্ত সোলেমান |
তোহফা (নীতিকাব্য) | ১৬৬৪ | তুহফ-ই নসাঈহ (ইউসুফ গদা) | |
হপ্তপয়কর | ১৬৬৫ | হপ্তপয়কর (নিজামী) | সৈয়দ মুহম্মদ খান |
সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল | ১৬৬৯ | সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল (গাওয়াসী) | মাগন ঠাকুর |
সিকান্দরনামা | ১৬৭৩ | সিকান্দরনামা (নিজামী) | নবরাজ মজলিস |
রাগতালনামা | মৌলিক | ||
পদাবলী | মৌলিক | ||
শিরী খুসরু | মৌলিক | ||