অভিস্রবণ

যে প্রক্রিয়ায় একটি বৈষম্যভেদ্য ঝিল্লীর মধ্য দিয়ে হাল্কা ঘনত্বের দ্রবণ হতে পানি (দ্রাবক) অধিক ঘন দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হয় তাকে অভিস্রবণ বা অসমোসিস বলে। দুটো দ্রবণের ঘনত্ব সমান না হওয়া পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া চলতে থাকে। অভিস্রবণ এক প্রকার ব্যাপন প্রক্রিয়া। পানিতে কিচমিচ ডুবিয়ে রাখলে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় কিছুক্ষণের মধ্যে ফুলে উঠে।

অভিস্রবণ হলো একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, যেখানে অর্ধভেদ্য পর্দার (Semi-permeable membrane) মাধ্যমে দ্রাবক পদার্থ (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পানি) কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে বেশি ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবেশ করে। এটি একটি বিশেষ ধরনের ব্যাপন, যা কেবল তরলের ক্ষেত্রে ঘটে।

অভিস্রবণ বোঝার জন্য ভিন্ন ঘনত্বের দুই দ্রবণের মধ্যে অবস্থিত পর্দার বৈশিষ্ট্য গুরুত্বপূর্ণ। পর্দাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:

অভেদ্য পর্দা:

  • যে পর্দা দিয়ে দ্রাবক বা দ্রাব কোনোটিই চলাচল করতে পারে না।
  • উদাহরণ: পলিথিন, কিউটিনযুক্ত কোষপ্রাচীর।

ভেদ্য পর্দা:

  • যে পর্দা দিয়ে দ্রাবক এবং দ্রাব উভয়ই চলাচল করতে পারে।
  • উদাহরণ: কোষপ্রাচীর।

অর্ধভেদ্য পর্দা:

  • যে পর্দা দিয়ে কেবল দ্রাবক অণু চলাচল করতে পারে, কিন্তু দ্রাব অণু চলাচল করতে পারে না।
  • উদাহরণ: কোষঝিল্লি, ডিমের খোসার ভেতরের পর্দা।

অভিস্রবণের উদাহরণঃ 

  1. কিশমিশ পানিতে ভিজিয়ে রাখাঃ 
    • শুকনো কিশমিশকে পানিতে রাখলে পানির অণুগুলো অর্ধভেদ্য পর্দা ভেদ করে কিশমিশের ভেতরে প্রবেশ করে।
    • ফলে কিশমিশ ফুলে ওঠে।
  2. উদ্ভিদের শিকড় থেকে পানি শোষণঃ
    • মাটির কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে শিকড়ের বেশি ঘনত্বের কোষের ভেতরে পানি প্রবেশ করে।
Reference: