যে মসৃণ তলে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে তাকে দর্পণ বলে। সাধারণত কাচের একদিকে ধাতুর (সাধারণত রূপা অথবা মার্কারির) প্রলেপ দিয়ে দর্পণ তৈরি করা হয়। কাচের উপর ধাতুর প্রলেপ দেওয়াকে পারা লাগান বা সিলভারিং বলে।
সমতল দর্পণ (Plane Mirror): একটি সমতল দর্পন হতে বস্তুর দূরত্ব যত, দর্পণ হতে বিম্বের দূরত্বও তত হয়। সমতল দর্পণে নিজের পূর্ণ বিম্ব দেখতে হলে দর্পণের দৈর্ঘ্য দর্শকের উচ্চতার কমপক্ষে অর্ধেক হওয়া প্রয়োজন। যেমন: একজন লোকের উচ্চতা ৬ ফুট। লোকটি আয়নায় নিজের পূর্ণ প্রতিবিম্ব দেখতে চাইলে আয়নার দৈর্ঘ্য কমপক্ষে (৬ ÷ ২) = ৩ ফুট হতে হবে। সরল পেরিস্কোপ তৈরিতে সমতল দর্পণ ব্যবহৃত হয়।
সরল পেরিস্কোপ (Simple Periscope): আলোর প্রতিফলন ও প্রতিসরণকে কাজে লাগানো হয়। প্রিজম ও আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনকে কাজে লাগিয়ে অনেক বেশি কার্যকর পেরিস্কোপ তৈরি করা যায়। কোনো দূরের জিনিস সোজাসুজি দেখতে বাধা থাকলে এই যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। ডুবোজাহাজ (Submrine) এর নাবিকেরা পেরিস্কোপের সাহায্যে পানির নিচ থেকে উপরের দৃশ্য দেখেন। ভীড় এড়িয়ে খেলা দেখা, শত্রু সৈন্যের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে এই যন্ত্র ব্যবহৃত হয়।
গোলীয় দর্পণ (Spherical Mirror):
উত্তল দর্পণ (Convex Mirror) : পিছনের যানবাহন বা পথচারী দেখার জন্য বিভিন্ন গাড়িতে উত্তল দর্পণ ব্যবহৃত হয়। আলোকরশ্মি চারদিকে ছড়িয়ে দেয় বলে মোটর গাড়ির হেডলাইট এবং রাস্তার লাইটে প্রতিফলক হিসেবে উত্তল দর্পণ ব্যবহৃত হয়।
অবতল দর্পণ (Concave Mirror) : বিবর্ধিত বিম্ব তৈরি করা যায় বলে রূপ চর্চা ও দাঁড়ি কাঁটার সময় ব্যবহৃত হয়।ডাক্তাররা চোখ, নাক, কান ও গলা পর্যবেক্ষণ করার সময় এই দর্পণ ব্যবহার করেন। স্টীমারের সার্চ লাইটের প্রতিফলক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নভো দূরবীক্ষণে অবতল দর্পণের ব্যবহার দেখা যায়।