আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন

আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন (১৯৭৯ - ১৯৮৯ খ্রি.):

আফগানিস্তান ঐতিহাসিকভাবেই বহিরাগত হানাদারদের জন্য কঠিন স্থান। এই দেশে সকল আক্রমণকারীকেই চরম শিক্ষা পেতে হয়েছে

প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ (১৮৩৯ ১৮৪২ খ্রি.) শেষে - আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় কয়েক হাজার ব্রিটিশ ও ভারতীয় সিপাহি আফগান যোদ্ধাদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছিল। আফগানিস্তান আক্রমণ করে ব্রিটিশ বাহিনী যে ভুল করেছিল, বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে সেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করে বসে সোভিয়েত ইউনিয়ন। জার্মান চ্যান্সেলর বিসমার্কের সাথে তাই সুর মিলিয়ে বলতে হয় "এটাও ইতিহাসের শিক্ষা যে, কেউই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না"। ১৯৭৯ সালে সামরিক মহড়ার আড়ালে সোভিয়েত বাহিনী (রেড আর্মি) আফগানিস্তানে প্রবেশ করে। তারা সেখানে একটি কমিউনিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠা করে। আফগানিস্তানের সাথে চীন এবং সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র (বর্তমানে স্বাধীন রাষ্ট্র) তুর্কেমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও তাজাকিস্তান এর সীমানা রয়েছে। এ কারণে আফগানিস্তান থেকে একদিকে চীন অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়নকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব ছিল। এই সুযোগ হাতছাড়া করে নি যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রশাসন আফগানিস্তানের কমিউনিস্ট সরকার বিরোধী গেরিলাদের (যারা 'মুজাহিদিন' নামে পরিচিত) জন্য সাহায্যের হাত প্রসারিত করে। আফগানিস্তানের সর্ববৃহৎ সীমানা রয়েছে পাকিস্তানের সাথে, যা ডুরান্ড লাইন নামে পরিচিত। পাকিস্তানের মাধ্যমে আফগান মুজাহিদদের বিপুল অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ শুরু করে মার্কিন প্রশাসন। পাকিস্তান সীমান্তে মুজাহিদদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আফগানিস্তানে পাঠানো হয়। আফগানিস্তানের আরেক প্রতিবেশী ইরান শিয়াপন্থী আফগান মুসলমানদের অস্ত্র সরবরাহ করে। সোভিয়েত বাহিনী আফগান মুজাহিদিনদের গেরিলা আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে। এক দশক পর সোভিয়েতরা বুঝতে পারে, দখলদারিত্ব টিকবে না। তারা নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সৈন্য প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়। 

Reference: জর্জ MP3 আন্তর্জা‌তিক