ওজোনস্তর অবক্ষয়
Depletion of ozone layer
ওজোন (O₂) অক্সিজেনের একটি রূপভেদ। ওজোনের রঙ গাঢ় নীল। বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোমণ্ডলে ওজোনের একটি স্তর আছে। ওজোনস্তরের পুরুত্ব খুব বেশি নয়। মৌসুমভেদে এবং ভৌগোলিক কারণে এই পুরুত্বের পরিমাণ কমবেশি হয়।
সূর্যরশ্মিতে ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থাকে। অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে চর্ম ক্যান্সার, চোখে ছানিসহ নানাবিধ রোগ হতে পারে। বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তর সূর্যের আলোর ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মির (Ultraviolet rays) বেশির ভাগই শুষে নেয়। ফলে মানুষসহ জীবজন্তু অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকারক দিক হতে রক্ষা পায়। ওজোনস্তর (Ozoneshere)-কে পৃথি বীর 'প্রাকৃতিক সৌরপর্দা' বলা হয়। সেই প্রাকৃতিক রক্ষা কবচ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ বিশেষ করে ক্লোরো-ফ্লোরো কার্বন (Chlorofluorocarbon CFC) গ্যাস ব্যবহারের কারণে ওজোনস্তর ক্ষয়ে যাচ্ছে। এতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে ওজোনস্তরে। সেই গর্ত গলে অতিবেগুনি রশ্মি ভূপৃষ্ঠে নেমে আসছে।
১৯২৮ সালে Prof. Thomas Midgley Jr. ক্লোরো- ফ্লোরো কার্বন আবিষ্কার করেন। ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন (CFC)
এর বাণিজ্যিক নাম ফ্রেয়ন। রেফ্রিজারেটরের কম্প্রেসার, এয়ারকন্ডিশনার প্রভৃতিতে শীতলীকারক হিসেবে ফ্রেয়ন ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এরোসোল, ইনহেলার প্রভৃতিতেও ফ্রেয়ন ব্যবহৃত হয়। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে নির্গমনের পর ক্লোরোফ্লোরো কার্বন স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে পৌঁছে এবং ওজোনস্তর ক্ষয় করছে। ওজোনস্তরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে ক্লোরিন গ্যাস (CL)।
স্ট্র্যাটোমণ্ডলের এই ঘটনাগুলি ছাড়াও মেরু অঞ্চলে বসন্তকালে (সেপ্টেম্বর - ডিসেম্বর) ট্রপোমণ্ডলে ওজোন হ্রাসের ঘটনাও ঘটে। ১৯৮৫ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন যে, ওজোনস্তরের পুরুত্ব হালকা হয়ে দক্ষিণ মেরুতে এন্টার্কটিকার ওপরে বিশাল গর্ত (Ozone hole) এর সৃষ্টি হয়েছে।