ঘূর্ণিঝড়ের ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Cyclone' যা গ্রিক শব্দ 'কাইক্লোস' (Kykos) থেকে এসেছে। এর অর্থ- কুণ্ডলী পাকানো সর্প । ঘূর্ণিঝড় হলো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় (Tropical cyclone) বা বায়ুমণ্ডলীয় একটি উত্তাল অবস্থা যা বাতাসের প্রচণ্ড ঘূর্ণায়মান গতির ফলে সংঘটিত হয়। পৃথিবীর যাবতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে তীব্রতার দিক থেকে উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ই সবচেয়ে ভয়াবহ । গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২৬.৫° সে. এর উপরে থাকা প্রয়োজন। অধিকাংশ ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি ঘটে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি অঞ্চল থেকে। সাধারণত ৫° উত্তর থেকে ৩০° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৫° দক্ষিণ অক্ষাংশ থেকে ৩০° দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়গুলির উৎপত্তি ঘটে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়কে আমেরিকা মহাদেশে ‘হারিকেন’, দূরপ্রাচ্যে ‘টাইফুন’, দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশে বলা হয় সাইক্লোন এবং বাংলায় ঘূর্ণিঝড়। বাংলায় এর আরেকটি প্রচলিত নাম ‘তুফান’ যা চীনা শব্দ ‘টাইফুন’ থেকে এসেছে। ভূ-প্রকৃতি অনুযায়ী বাংলাদেশ উষ্ণ-আর্দ্র অঞ্চলে অবস্থিত। প্রতি বছর দুটি মৌসুমে মে-জুন মাসে (প্রাক-বর্ষা মৌসুম) এবং অক্টোবর-নভেম্বর মাসে (বর্ষা-উত্তর মৌসুম) বঙ্গোপসাগরের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি স্থানে বেশকিছু নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ফানেল বা চোঙ আকৃতির উপকূলীয় অঞ্চলটি বঙ্গোপসাগরে প্রায়শই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির ভূগত কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয় ।