ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম ও সুলতানী শাসন
ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের রাজ্য বিস্তারের তিনটি পর্যায় লক্ষ্য করা যায়।
- ইসলাম ও সুফিমতের প্রভাবে ভারতবর্ষে চিন্তা বিপ্লব ঘটেছিল।
- উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ বিন আব্দুল মালিকের রাজত্বকালে ইরাকের শাসনকর্তা হাজ্জাজ বিন ইউসুফের জামাতা মুহাম্মদ বিন কাসিমের নেতৃত্বে ৭১২ খ্রিষ্টাব্দের অভিযানে ও যুদ্ধে সিন্ধু রাজা দাহির পরাজিত ও নিহত হলে সিন্ধু ও মুলতান রাজ্য মুসলমানদের অধিকারে আসে। মুহাম্মদ বিন কাসিমের অকালমৃত্যুর কারণে উপমহাদেশে ইসলাম একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
- সিন্ধু ও মুলতান জয়ের প্রায় ৩০০ বছর পর ১০০০-১০২৭ সালের মধ্যে গজনীর সুলতান মাহমুদ মোট ১৭ বার ভারত আক্রমণ করেন। রাজা-জয় বা ইসলাম প্রচার তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। ১০২৬ সালে সুলতান মাহমুদ গুজরাটের সোমনাথ মন্দির আক্রমণ ও লুণ্ঠন করেন।
- সুলতান মাহমুদের মৃত্যুর প্রায় দেড়শ বছর পর উপমহাদেশে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। এ পর্যায় নেতৃত্ব দান করেন গজনীর ঘুর সাম্রাজ্যের শাসক মুঈজ-উদ-দীন মুহাম্মদ-বিন-সাম, যিনি ইতিহাসে মুহাম্মদ ঘুরী নামে পরিচিত।
- ১১৯২ সালে দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধে মুহাম্মদ ঘুরী পৃথ্বীরাজকে পরাজিত করে দিল্লি, আগ্রা ও আজমীর দখল করেন এবং শাসনভার সেনাপতি কুতুবুদ্দীন আইবেকের উপর ন্যস্ত করেন।
- এদিকে ১২০৪ সালে ইখতিয়ার-উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি নামে এক তুর্কী কুতুবুদ্দীনের অনুমতিক্রমে সমগ্র বিহার ও বাংলার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল জয় করেন।
- মুহাম্মদ ঘুরী ভারতে মুসলিম রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা তবে বাংলায় মুসলিম শাসনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন ইখতিয়ার-উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি।