ভৌগোলিক আবিষ্কার
ইউরোপকে অনেক প্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য অন্য মহাদেশ বিশেষ করে এশিয়ার ওপর প্রাচীন কাল থেকেই দ্বারস্থ হতে হচ্ছিল। ইউরোপীয়দের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া থেকে মসলা, চীন থেকে সিল্ক, ভারত থেকে তুলা ও রত্ন আমদানি করতে হতো। তবে যে জিনিসটির জন্য ইউরোপ সবচাইতে বেশি এশিয়ার ওপর নির্ভরশীল ছিল তা হলো মসলা। গোলমরিচ, দারুচিনি, আদা, মরিচ, জয়ফল লবঙ্গ শুধুমাত্র গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দক্ষিণ পূর্ব-এশিয়ায় জন্মায়। ইউরোপ এগুলো আমাদের দেশের মতো সুস্বাদু খাবার তৈরি জন্য ব্যবহার করতো তা কিন্তু নয়। তখন ইউরোপে রেফ্রিজারেটর আবিষ্কৃত হয় নি, মাংস সংরক্ষণের জন্য মসলার প্রয়োজন ছিল, তখন লবণ দিয়ে মাংস সংরক্ষণ করা হতো, কিন্তু তা অনেকেই পছন্দ করতো না। ফলে ইউরোপে দূরপ্রাচ্যের দ্রব্যের চাহিদা ক্রমে বেড়েই চলেছিলো। ১৪৫৩ সালে কন্সটান্টিনোপলের পতন ঘটার সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে তুর্কি শক্তির আধিপত্য বিস্তৃত হয়। ফলে প্রাচ্য থেকে এসব দ্রব্য সামগ্রী ভূমধ্যসাগরের পথে ইউরোপে আমদানি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই সময় থেকে পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহ সমুদ্র পথে এশিয়ার সাথে বাণিজ্য পথ আবিষ্কারের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। প্রধানত এরই ফলশ্রুতিতে সংঘটিত হয় ভৌগোলিক আবিষ্কার।