মর্সিয়া সাহিত্য
মুসলমান সংস্কৃতির নানা বিষাদময় কাহিনী তথা শোকাবহ ঘটনার বর্ণনার মাধ্যমে মর্সিয়া সাহিত্যের উদ্ভব হয়েছে। এ সাহিত্য প্রধানত কারবালা প্রান্তরে নিহত ইমাম হোসেন ও অন্যান্য শহিদকে উপজীব্য করে লেখা। এদেশে এ সাহিত্যের প্রসার ঘটে বণিক, দরবেশ, কবি, পণ্ডিত প্রভৃতি আগমনকারী লোকদের অনুপ্রেরণায়। মুসলিম খলিফা ও শাসকদের বিজয় কাহিনীও এ শ্রেণিতে স্থান পেয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন-উত্তর
প্র. মর্সিয়া সাহিত্যে 'জঙ্গনামা' কে রচনা করেন?
উ. দৌলত উজির বাহরাম খান। 'জঙ্গনামা' (১৭২৩) কাব্য কারবালার বিষাদময় যুদ্ধ-বিগ্রহ এর বিষয়বস্তু।
প্র. মর্সিয়া সাহিত্যের অন্যান্য কবি কে কে?
উ. গরীবুল্লাহ, মুহম্মদ খান (তাঁর রচিত কাব্য 'মঞ্জুল হোসেন'), হায়াৎ মামুদ, মীর মশাররফ হোসেন, কায়কোবাদ, রাধারমণ গোপ (হিন্দু কবি)।
প্র. মর্সিয়া সাহিত্যের হিন্দু কবি কে?
উ. রাধারমণ গোপ। তাঁর রচিত কাব্য- 'ইমামগনের কেচ্ছা', 'আফৎনামা'।
প্র. মর্সিয়া সাহিত্য কী?
উ. মর্সিয়া অর্থ শোক প্রকাশ করা। এগুলো একধরনের শোককাব্য। 'মর্সিয়া' আরবি শব্দ। আরবি সাহিত্যে মর্সিয়ার নানা ধরনের শোকাবহ ঘটনা থেকে হলেও পরে তা কারবালা প্রান্তরে নিহত ইমাম হোসেন ও অন্যান্য শহিদকে উপজীব্য করে লেখা কবিতা 'মর্সিয়া' সাহিত্য নামে পরিচিত।
প্র. মর্সিয়া সাহিত্যের প্রথম কবি কে?
উ. শেখ ফয়জুল্লাহ। তাঁর রচিত কাব্য 'জয়নবের চৌতিশা' (১৫৭০) (কোনো কোনো রেফারেন্স গ্রন্থে এটির নাম 'জয়নালের চৌতিশা' হিসেবে উল্লেখ আছে)। এটি কারবালার কাহিনীর একটি ছোট অংশ অবলম্বনে রচিত।
প্র. যুদ্ধকাব্য কী?
উ. মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) ও তাঁর পরবর্তী বংশধরদের সাথে সংঘটিত বিভিন্ন যুদ্ধের কাহিনীভিত্তিক রচিত কাব্যই যুদ্ধকাব্য হিসেবে পরিচিত। মর্সিয়া সাহিত্যকেই যুদ্ধকাব্য হিসেবে অভিহিত করা হয়। কয়েকটি যুদ্ধকাব্য: 'জঙ্গনামা' (দৌলত উজির বাহরাম খান), 'রসুল বিজয়' (শাহ বারিদ খান), 'জয়কুম রাজার লড়াই' (সৈয়দ সুলতান), 'আমীর হামজা' (ফকির গরীবুল্লাহ), 'জয়নবের চৌতিশা' (শেখ ফয়জুল্লাহ), 'কাশিমের লড়াই' (শেরবাজ) প্রভৃতি।