প্রাচীন যুগের একমাত্র সাহিত্যিক নিদর্শন চর্যাপদ প্রকাশের ১০০ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও ফোকলোর বিশেষজ্ঞ ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ চর্যাপদ গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ করেন। তাঁর সংকলিত ও সম্পাদিত চর্যাপদের নাম 'নতুন চর্যাপদ'। নতুন চর্যাপদ মূলত বজ্রযানী দেবদেবীর আরাধনার গীত। এর পদগুলোতে তান্ত্রিক নানা দেবদেবীর রূপসৌন্দর্য, মুখ ও বাহুর বর্ণনা, তাঁদের আসন, মুদ্রা ও দেহভঙ্গি, তাঁদের আভরণ ও আয়ুধ ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য ও বর্ণনা প্রদান করা হয়েছে। এটি ২০১৭ সালে বাংলা একাডেমি বইমেলায় প্রকাশিত হয় এবং উৎসর্গ করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে। ২০০৮ সালে ড. শাহেদ কাঠমুন্ডু ও আশেপাশের বিভিন্ন বজ্রযানী মন্দিরে পুঁথি সংগ্রহ করতে গিয়ে রত্নকাজী বজ্রাচার্যের নিকট থেকে নতুন চর্যাপদের দুটি সংকলিত পুস্তক সংগ্রহ করেন। এ পুস্তক দুটির পদগুলো ছিলো নেওয়ারিমিশ্রিত দেবনাগরী অক্ষরে মুদ্রিত। নতুন চর্যাপদে যেসব পদ সংকলিত হয়েছে সেগুলোর রচনাকাল অষ্টম থেকে বিশ শতক পর্যন্ত। সুতরাং নতুন এই চর্যাপদ প্রমাণ করে যে, চর্যাপদ কেবল প্রাচীন সাহিত্যেরই নিদর্শন নয়, মধ্যযুগেও এগুলোর রচনা অব্যাহত ছিল। এমনকি বিশ শতকেও চর্যাপদ রচিত হয়েছে। সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ সংকলিত ও সম্পাদিত নতুন চর্যাপদে ৩৩৫টি পদ সংকলিত হয়েছে। এছাড়া পরিশিষ্ট অংশে রাহুল সাংকৃত্যায়ন সংগৃহীত ২০টি, শশিভূষণ দাশগুপ্ত সংগৃহীত ২১টি এবং জগন্নাথ উপাধ্যায় সংগৃহীত ৩৭টি পদ সংকলিত হয়েছে। সে হিসেবে এ গ্রন্থে সংকলিত নতুন চর্যাপদের মোট সংখ্যা ৪১৩টি। নতুন চর্যাপদের ভূমিকা অংশটি চার ভাগে বিভক্ত।
প্রথম অংশ - 'নতুন চর্যার সংগ্রহ ও চর্যাকার পরিচয়।'
দ্বিতীয় অংশ -'নতুন চর্যায় বজ্রযানী দেবদেবী।'
তৃতীয় অংশ -'নতুন চর্যার আঙ্গিক, ভাষা ও ভূগোল।'
চতুর্থ অংশ- 'চর্যাপদ ও নতুন চর্যা'।